ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আ.লীগের সিদ্ধান্ত না মানার অভিযোগ, অস্বীকার লিটুর

স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :: আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত ও আস্থাশীল দলের সবপর্যায়ের নেতাকর্মী। কিন্তু কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের সিদ্ধান্ত না মানার অভিযোগ উঠেছে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও জেলার সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সমন্বয় করে সম্মেলন করার নির্দেশনা দিলেও এসব উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগে প্রকাশ। এনিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে অবেহেলিত নেতাকর্মীদের মাঝে। তবে এ অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা দাবি করেছেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু।

চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমরা আস্থাশীল। সম্প্রতি পৌরসভা নির্বাচনে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন। নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয় করতে সকল নেতাকর্মী ঝাপিয়ে পড়লেও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু ও তার অনুসারীরা কোন ধরণের সহযোগিতা করেনি। এরপরও বেশিরভাগ নেতাকর্মীর আন্তরিকতায় নৌকা প্রতীক বিজয় লাভ করে। কিন্তু নৌকার বিরুধীতা করায় জেলা আওয়ামী লীগ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করেন (পরে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়)। এরপর থেকে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সংগঠনিক কার্যক্রম চলছিলো।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ জুন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক টিমসহ চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি জাতীয় সংসদ ভবনের নিজস্ব কার্যালয়ে বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে বিশেষ করে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, পেকুয়া, মাতামুহুরী ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা হয়। লিটুর সভাপতি পদে থাকা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে।
একপর্যায়ে সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি সিনিয়র নেতা এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি ও আমাকে (মেয়র আলমগীর) নিয়ে সমন্বয় করে সম্মেলন করার নির্দেশ দেন লিটুকে। কিন্তু গত ১৭ জুন সন্ধ্যায় সিনিয়র নেতাদের উপেক্ষা করে মনগড়া বর্ধিত সভা ডাকেন। ওই বর্ধিত সভায় পৌর আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা আ.লীগের সভাপতি-সম্পাদকের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে বলেছেন মেয়র আলমগীর চৌধুরী।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম মোস্তফা বলেন, আমাকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও অন্যান্য সাংগঠনিক কার্যক্রম সমন্বয় করার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। শুনেছি পৌর আওয়ামী লীগ নাকি বর্ধিত সভা ডেকেছে। আমাকে তারা জানায়নি। কেন জানায়নি সেটাও জানি না। তবে বিষয়টি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে জানানো হবে বলে জানান এই প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা।

অভিযোগের ব্যাপারে ফোনে জানতে চাইলে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু বলেন, আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করতে কর্মীদের চাঙ্গা করার লক্ষে সভার আয়োজন করেছিলাম। এটি সম্মেলন কেন্দ্রীক সাংগঠনিক সভা নয়। এরপরেও মেয়র আলমগীর চৌধুরীকে নিমন্ত্রণ করতে ফোন করেছিলাম। তিনি রিসিভ করেননি। সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। সাংগঠনিক সভার আয়োজন করলে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী করা হবে। যা আমার ফেসবুকেও লিখেছি।

পাঠকের মতামত: